উখিয়া কলেজের স্নাতক (পাস) কোর্সের শিক্ষা সফর-১৭ সম্পন্ন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭ ৪:৫১ পিএম


পলাশ বড়ুয়া::
১৫ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) দক্ষিণ কক্সবাজারের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ উখিয়া কলেজের স্নাতক (পাস) কোর্সের শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সফর-২০১৭ সম্পন্ন হয়েছে।

সকাল ১০টায় কলেজ চত্বরে ফাগুনী আমেজে সেজেগুজে একে একে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। যাত্রা পূর্বে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ দেলোয়ার, ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন আইটি কর্মকর্তা পলাশ বড়ুয়া, গীতা থেকে পাঠ করেন ১ম বর্ষের ছাত্রী সুমতি শর্মা।
শুরুতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ ফজলুল করিম, উপাধ্যক্ষ আব্দুল হক, সহঃ অধ্যাপক ফরিদূল আলম চৌং সহঃ অধ্যাপক মোঃ আলী, সহঃ অধ্যাপক রফিকুল আলম চৌং, প্রভাষক নবী হোছাইন। পুরো প্রোগ্রাম পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক আলমগীর মাহমুদ। সবার অংশগ্রহণে শিক্ষা সফর-২০১৭ শুরুর হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে একই সাথে ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনও করা হয়।

শিক্ষা সফরে দর্শনীয় স্থান সমূহ- রামু সেনানিবাস, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঐতিহাসিক রাংকূট মহাবিহার, দরিয়া নগর, হিমছড়ি, কোরাল পাথুরে বীচ ইনানী। উল্লেখ্যযোগ্য যে, সফরকালীন পেদাতিং তিং, পালং, নেটং, শোভলং নামে হিসাবরক্ষক জিয়াউল হক, আইটি কর্মকর্তা পলাশ বড়ুয়া, কর্মচারী শামশুল আলমের নেতৃত্বে ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে পুরো সফরটি সফল ভাবে শেষ হয়। পেদাতিং তিং দলের দায়িত্বে ছিলেন আইটি কর্মকর্তা পলাশ বড়ুয়া। তাঁর দলে ছিল বুলবুলি আকতার, নিগার সুলতানা, নয়ন বড়ুয়া, মোহছেনা আকতার, মো: হিরু, মো: ইব্রাহীম, মো: খালেক, মো: মিজান, মো: নাসির, কামাল উদ্দিন। পুরো সফরটি বাস্তবায়নের নেপথ্যে ভুমিকায় ছিল আবছার উদ্দিন, বেদার উদ্দিন, সুকমল বড়ুয়া সহ আরও ২/৩জন।


শিক্ষা সফরে রামু ক্যান্টনমেন্টে অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ পরবর্তী শিক্ষাথীরা যা দেখেছে তা হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নমূখী নানা কার্যক্রম যা শৈল্পিকতায় পরিপূর্ণ। শিখেছে নিয়মানুবর্তিতা। বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিদর্শনে ফুলের বাহার ও বিলুপ্ত প্রায় গাছগাছালির সমাহার। ঐতিহাসিক রাংকূট মহাবিহার ও সনাতন ধর্মীদের তীর্থধাম। দায়িত্ব বৌদ্ধ ভিক্ষু’র কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরেছে স্বয়ং তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ মিয়ানমার এক রাজার নিমন্ত্রণে যাওয়ার সময় ঐ স্থানে অবস্থান করেছিলেন এবং তাঁর প্রিয় শিষ্যকে ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী দীর্ঘকাল পরে স¤্রাট অশোক বুদ্ধ ধর্ম প্রচারে বুদ্ধের বক্ষাস্থি নিয়ে ৮৪ হাজার ধর্মচৈত্য নির্মাণ করেছিলেন। তার মধ্যে এটিও একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। যা বাংলাদেশে আর কোথাও নেই। একই ভাবে সনাতন ধর্মের রামও তাঁর পিতার শর্তানুযায়ী বনবাসকালীন সময়ে এই স্থানে অবস্থান করেছিল বলে জানা যায়। তারই ধারাবাহিকতায় একই স্থানে দুই ধর্মের দুটি তীর্থস্থান পাশাপাশি অবস্থানে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ঘেষে সুউচ্চ পাহাড় ঘেষে দরিয়া নগরে মধ্যহ্নভোজ সেরে পর্যটন রাণী খ্যাত কোরাল পাথুরে সমৃদ্ধ ইনানী বীচের বালিয়াড়িতে বসে একে একে সফরকালীন উপলদ্ধির কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে কাঁদলেন ও কাঁদালেন উপাধ্যক্ষ আবদুল হক। শিক্ষা জীবনে সুস্থ মানসিক বিকাশে শিক্ষা সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। এতে করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে জড়তা দূর হয়। সৃষ্টি হয় সুসম্পর্কের। ফলে বাস্তব জীবনে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। জীবনের আরো একটি সুন্দর ও আনন্দময় দিন অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে বলে স্মৃতি রোমন্থন করেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. গিয়াস উদ্দিন, সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক আলমগীর মাহমুদ, আইটি কর্মকর্তা পলাশ বড়ুয়া, কর্মচারী শামশুল আলম, শিক্ষার্থী বেদার উদ্দিন, সুকমল বড়ুয়া, সুমতি শর্মা প্রমুখ। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও মুগ্ধ সবার আন্তরিকতায়।